সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
এস প্লাস টিভি

শ্যামলিমার গল্প


প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

শ্যামলিমার গল্প

জারুল জামরুল বনে হৈমন্তী  হাওয়া বইছে, সেই হাওয়ায় হাফসার উসকোখুসকো চুলগুলো উড়ছে। অবহেলায় অযত্নে চুলের নীচগুলো ঝড়ে গেছে। যেটুকু আছে,,,তা সুপারি পাতার ন্যায় শুধু আকাশের দিকেই চেয়ে থাকে সারাক্ষণ। 

খানিক দূরেই তার বাবার বাড়ি,,, হাঁটতে হাঁটতে কখন যে পৌছে গেলো তা হাফসার চৈতন্যেই আসলো না। বাড়িতে ঢুকার সময় কী যেন মনে করে বাইবাড়ির গোয়ালঘরে একবার ঢু মেরে আসলো সে। 

উঠোনে এক কোণে বসে হাফসার মা ধানের সঙ্গে সখ্যতা করছেন। একটু পরেই দাওয়ায় বসবেন। হাফসার দিকে মায়ের চোখের ঝিলিক পরতেই তাকে বললেন  __

কীরে হাফু, কই ছিলি এতক্ষণে? 

হাফসা জবাব দেয় না। কী করে মাকে বলবে মাঝিবাড়ির জলপাই গাছ থেকে জলপাই আনতে গেয়েছিল! তাও আবার চুরি করতে। পরনে তার ছেঁড়া জামা -পাজামা। উড়নাটা পেঁচিয়ে গলা থেকে কোমর পর্যন্ত গাইট বাঁধা। হাফসা তখনও নির্বাক। ভয়ে বুক কাঁপছে তার।

এমন সময় মা বললেন,  " যা___ ঘর থেকে কুলা, ঝাটাই, আর পিঁড়িটা নিয়ে আায়"।

একচুটে হাফসা ঘরে ঢুকে আর হাপাতে হাপাতে মনে মনে বলে, যাক" বাবা বাঁচা গেলো __তবে। 

হাফসা ঘর থেকে দাওয়ার সব জিনিসপত্র আনতে আনতে দেরি হওয়ায়, মা তাকে আরও দু'চারিটি ধমক শোনায়। যখন হাফসার হাত থেকে ঝাটাইটা মাটিতে নামাতে যায়, অমনি তার ওড়নার প্যাঁচে গিট বাঁধা কুটুরি থেকে দুটো জলপাই মাটিতে পড়ে যায়। মা দেখে ফেলে তৎক্ষনাৎ হাফসা ওগুলো কুড়িয়ে হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। 

" হতচ্ছাড়ি বাঁদড় " কোথায় গিয়েছিলি বল?  চুরি করতে নাকি? হাফসা আবারও নির্বাক তাকিয়ে রয়। সে বাকরুদ্ধ হয়ে ঠাঁই দাড়িয়ে থাকে দারোগা মায়ের সামনে।

তার জবাব দিচ্ছে না দেখে মা তাকে, নারকেল পাতার সলার ঝাটাই দিয়ে পিঠাতে শুরু করতেই, হাফসা ফুড়ুৎ করে দৌড়ে একেবারে অন্তঃপুরের বাইরে চলে যায়। গোয়ালঘরের পেছনে দিঘির পাড়ে বাঁশের মাচায় বসে থাকে। হাফসা হাপাতে থাকে, পাশের কড়ই গাছ থেকে একটি শুকনো ডাল ভেঙে পরায় সে  থতমত খেয়ে যায় রীতিমতো। এই বুঝি মা আসছে "ঝাটাই নিয়ে"। ভয়ে ভয়ে পেছন ফিরে তাকায় সে। কই, না তো মা আসেনি। বরং ডাল ভেঙে পড়েছে উপর থেকে। আসলে কথায় আছে না! " চোরের মন পুলিশ পুলিশ"। 

সে এবার ভাবতে থাকে একটু নুন আনা যায় কি

আপনার মতামত লিখুন

এস প্লাস টিভি

সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫


শ্যামলিমার গল্প

প্রকাশের তারিখ : ২৫ মে ২০২৫

featured Image

জারুল জামরুল বনে হৈমন্তী  হাওয়া বইছে, সেই হাওয়ায় হাফসার উসকোখুসকো চুলগুলো উড়ছে। অবহেলায় অযত্নে চুলের নীচগুলো ঝড়ে গেছে। যেটুকু আছে,,,তা সুপারি পাতার ন্যায় শুধু আকাশের দিকেই চেয়ে থাকে সারাক্ষণ। 

খানিক দূরেই তার বাবার বাড়ি,,, হাঁটতে হাঁটতে কখন যে পৌছে গেলো তা হাফসার চৈতন্যেই আসলো না। বাড়িতে ঢুকার সময় কী যেন মনে করে বাইবাড়ির গোয়ালঘরে একবার ঢু মেরে আসলো সে। 

উঠোনে এক কোণে বসে হাফসার মা ধানের সঙ্গে সখ্যতা করছেন। একটু পরেই দাওয়ায় বসবেন। হাফসার দিকে মায়ের চোখের ঝিলিক পরতেই তাকে বললেন  __

কীরে হাফু, কই ছিলি এতক্ষণে? 

হাফসা জবাব দেয় না। কী করে মাকে বলবে মাঝিবাড়ির জলপাই গাছ থেকে জলপাই আনতে গেয়েছিল! তাও আবার চুরি করতে। পরনে তার ছেঁড়া জামা -পাজামা। উড়নাটা পেঁচিয়ে গলা থেকে কোমর পর্যন্ত গাইট বাঁধা। হাফসা তখনও নির্বাক। ভয়ে বুক কাঁপছে তার।

এমন সময় মা বললেন,  " যা___ ঘর থেকে কুলা, ঝাটাই, আর পিঁড়িটা নিয়ে আায়"।

একচুটে হাফসা ঘরে ঢুকে আর হাপাতে হাপাতে মনে মনে বলে, যাক" বাবা বাঁচা গেলো __তবে। 

হাফসা ঘর থেকে দাওয়ার সব জিনিসপত্র আনতে আনতে দেরি হওয়ায়, মা তাকে আরও দু'চারিটি ধমক শোনায়। যখন হাফসার হাত থেকে ঝাটাইটা মাটিতে নামাতে যায়, অমনি তার ওড়নার প্যাঁচে গিট বাঁধা কুটুরি থেকে দুটো জলপাই মাটিতে পড়ে যায়। মা দেখে ফেলে তৎক্ষনাৎ হাফসা ওগুলো কুড়িয়ে হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। 

" হতচ্ছাড়ি বাঁদড় " কোথায় গিয়েছিলি বল?  চুরি করতে নাকি? হাফসা আবারও নির্বাক তাকিয়ে রয়। সে বাকরুদ্ধ হয়ে ঠাঁই দাড়িয়ে থাকে দারোগা মায়ের সামনে।

তার জবাব দিচ্ছে না দেখে মা তাকে, নারকেল পাতার সলার ঝাটাই দিয়ে পিঠাতে শুরু করতেই, হাফসা ফুড়ুৎ করে দৌড়ে একেবারে অন্তঃপুরের বাইরে চলে যায়। গোয়ালঘরের পেছনে দিঘির পাড়ে বাঁশের মাচায় বসে থাকে। হাফসা হাপাতে থাকে, পাশের কড়ই গাছ থেকে একটি শুকনো ডাল ভেঙে পরায় সে  থতমত খেয়ে যায় রীতিমতো। এই বুঝি মা আসছে "ঝাটাই নিয়ে"। ভয়ে ভয়ে পেছন ফিরে তাকায় সে। কই, না তো মা আসেনি। বরং ডাল ভেঙে পড়েছে উপর থেকে। আসলে কথায় আছে না! " চোরের মন পুলিশ পুলিশ"। 

সে এবার ভাবতে থাকে একটু নুন আনা যায় কি


এস প্লাস টিভি

প্রকাশক এবং সম্পাদক - মুসা আহমেদ

কপিরাইট © ২০২৫ এস প্লাস টিভি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত